জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন করার নিয়ম ও অনলাইনে ভোটার এনআইডি কার্ড সংশোধন করার পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনায় আপনাকে স্বাগতম। নিজে নিজে আইডি কার্ড সংশোধন করার “NID Card Correction” সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটি ধাপে ধাপে সাজানো হয়েছে।
NID Card এর তথ্যে কোন প্রকার ভুল থাকলে তা অনলাইনে আবেদন করার মাধ্যমে সংশোধন করা যায়। সাধারণত নতুন ভোটার আবেদন করার সময় কেউ ভুল তথ্য প্রদান করলে অথবা কম্পিউটার অপারেটর ভুল টাইপিং করার ফলে আইডি কার্ডে ভুল হয়ে থাকে। নিয়ম মেনে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট সহ সংশোধন আবেদন করলে NID Card এর যেকোনো ভুল সংশোধন করা যায়।
জাতীয় পরিচয়পত্রের যেকোন ভুল এখন অনলাইনে সংশোধন আবেদনের মাধ্যমে পরিবর্তন করা যায়। এনআইডি কার্ডে নিজের নামে ভুল হলে অথবা বাবা-মার নাম ভুল লিপিবদ্ধ হলে তা খুব সহজে সংশোধন করা যায়। জন্ম তারিখে ভুল থাকলে NID Correction Application করে সংশোধন করা যাবে।
জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন নিয়ম
জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন করার জন্য প্রথমে services.nidw.gov.bd এই ওয়েবসাইটি ভিজিট করুন। এখন NID নাম্বার, জন্ম তারিখ দিয়ে একাউন্ট রেজিস্টার করুন। তারপর আপনার ঠিকান, মোবাইল নাম্বার এবং ফেইস ভেরিফিকেশন করে একাউন্টে লগইন করুন।
একাউন্ট তৈরি হয়ে গেলে আপনার NID একাউন্টের ড্যাশবোর্ড থেকে এডিট প্রোফাইলে ক্লিক করে প্রয়োজনীয় তথ্য সংশোধন করুন। সবশেষ সংশোধন ফি জমা দিয়ে অনলাইনে আবেদন জমা দিন। আবেদন এপ্রোভ হলে প্রোফাইল মেনু থেকে ডাউনলোড অপশনে ক্লিক করে সংশোধিত NID Card Download করুন।
ভোটার আইডি সংশোধন আবেদন জমা দেয়ার আগে খেয়াল রাখতে হবে যাতে চাহিত সংশোধনের জন্য প্রয়োজনীয় প্রমানপত্র আপলোড করতে হবে। আপনার ভোটার আবেদনে যে তথ্য পরিবর্তন করতে চান তা তার সত্যতা প্রমান করতে সত্যায়িত কাগজপত্র আবেদনের সাথে জমা দিতে হয়।
আইডি কার্ড সংশোধন আবেদন সামঞ্জস্য এবং বৈধ হলে সাধারনত ২৫ দিন থেকে ৩০ দিন এর মধ্যে জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন আবেদন অনুমোদন পেয়ে যায়। তবে নির্বাচন চলাকালীন সময়ে এই অনুমোদনের সময়সীমা পরিবর্তন হতে পারে।
ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে কি কি লাগে
ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে কি কি কাগজপত্র জমা দিতে হবে, তা নির্ভর করবে জাতীয় পরিচয়পত্রের কি ধরনের তথ্য পরিবর্তন করা হবে তার উপর। NID Card সংশোধন করতে শিক্ষাগত যোগ্যতা সনদ, অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ, ড্রাইভিং লাইসেন্স এবং ই পাসপোর্ট প্রমান হিসেবে কার্যকর ভুমিকা পালন করে
উপরে বর্ণিত মৌলিক ডকুমেন্ট গুলো না থাকলে, কিছু কিছু ক্ষেত্রে এফিডেভিট (হলফনামা), নাগরিক সনদ, ওয়ারিশ সনদ আপলোড করতে হয়। আইডি কার্ডে স্বামী কিংবা স্ত্রীর নাম সংশোধন (পরিবর্তন) করতে কাবিন নামার প্রয়োজন হয়।
তেমনি ভাবে জাতীয় পরিচয়পত্রে রক্তের গ্রুপ না দেয়া থাকলে তা যুক্ত করতে অথবা (পরিবর্তন) করতে মেডিক্যাল ক্লিনিক হতে রক্তের গ্রুপিং টেস্ট রিপোর্ট আপলোড করতে হয়। ঠিকানা সংশোধন করতে বিদ্যুৎ বিলের কাগজ বা ইউটিলিটি বিলের কাগজ জমা দিতে হবে।
জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন করতে কি কি ডকুমেন্ট লাগে তা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে কি কি লাগে এই লিখাটি পড়ুন।
ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে কত টাকা লাগে
ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন বা জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন করতে সর্বনিন্ম ২৩০টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৩৪৫টাকা ফি প্রদান করতে হয়। আবেদনের ধরনের উপর সংশোধন ফি নির্ভর করে। ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন ৩টি প্রধান শ্রেণিতে বিভক্ত-
- ব্যক্তিগত তথ্য সংশোধন
- অন্যান্য তথ্য
- ঠিকানা পরিবর্তন
ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন ফি কত তা একটি টেবিলে উপস্থাপন করা হলো
সংশোধনের ধরণ
সংশোধন ফি
ব্যক্তিগত তথ্য সংশোধন
২৩০ টাকা
অন্যান্য তথ্য সংশোধন
১১৫ টাকা
উভয় তথ্য সংশোধন
৩৭৫ টাকা
আইডি কার্ড রিইস্যু (Urgent)
আইডি কার্ড রিইস্যু (Regular)
২৩০ টাকা
জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন ফি তালিকা
এন আইডি কার্ডের সংশোধন ফি বিকাশ , রকেট ও নগদ মোবাইল ব্যাংকিং ব্যাবহার করে পরিশোধ করা যায়। বিকাশে NID নাম্বার দিয়ে ভোটার আইডি সংশোধন ফি জমা দেয়া যায়।
ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করার নিয়ম
অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করার জন্য আপনাকে প্রথমে এনআইডি ওয়েবসাইটে আপনার NID Number, জন্ম তারিখ এবং একটি সিকিউরিটি ক্যাপচা পূরণ করে অ্যাকাউন্ট রেজিস্টার করতে হবে। তারপর ফেস ভেরিফিকেশন করে অ্যাকাউন্ট লগইন করুন। আপনার প্রোফাইলের এডিট বাটনে ক্লিক করে প্রয়োজনীয় তথ্য পরিবর্তন করে আবেদন জমা দিন।
সবার বুঝার সুবিধার জন্য বিষয়টি কয়েকটি ছোট ছোট ধাপে বিভক্ত করা হয়েছে। চলুন আইডি কার্ড সংশোধন করার পুরো প্রক্রিয়াটি ধাপে ধাপে দেখে নেই।
Step1: অ্যাকাউন্ট রেজিস্ট্রেশন
জাতীয় পরিচয় পত্র ওয়েবসাইটে রেজিস্ট্রেশন করার জন্য প্রথমে ভিজিট করতে হবে https://services.nidw.gov.bd/nid-pub/ ওয়েবসাইটে। ভোটার আইডি কার্ডের নাম্বার, জন্ম তারিখ, ঠিকানা, মোবাইল নাম্বার ভেরিফিকেশন করে অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে হবে।
NID BD অ্যাকাউন্ট রেজিস্ট্রেশন
ভোটার আইডি তথ্য প্রদান
অ্যাকাউন্ট তৈরির এই পর্যায়ে যার NID Card information change করতে চাচ্ছেন তার জাতীয় পরিচয়পত্রের নাম্বার, জন্মতারিখ দিয়ে ফরম ফিলাপ করতে হবে। এনআইডি কার্ডের নাম্বার জানা না থাকলে ভোটার স্লিপের ফরম নাম্বার ব্যাবহার করতে পারবেন।
ভোটার আইডি তথ্য দিয়ে ফরম পূরণ
জাতীয় পরিচয় পত্রের ঠিকানা যাচাই
ভোটার আইডি কার্ডের তথ্য সঠিক ভাবে পূরণ করা হলে, এখন আপনাকে জাতীয় পরিচয় পত্রের ঠিকানা যাচাই করতে বলা হবে। এনআইডি কার্ডের আবেদনে বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানা যেমন দেওয়া ছিলো ঠিক তেমন করে ঠিকানা দিতে হবে।
ঠিকানা যাচাই
মোবাইল নাম্বার ভেরিফিকেশন
আইডি কার্ডে আপনার যে মোবাইল নাম্বার দেয়া ছিলো সেই নাম্বারটির প্রথমের কিছু সংখ্যা এবং শেষের ৩টি নাম্বার দেখানো হবে। এই মোবাইল নাম্বার আপনার কাছে থাকলে কোড পাঠানোর জন্য “বার্তা পাঠান” বাটনে চাপুন। আর ফোন নাম্বারটি না থাকলে নতুন একটি নাম্বার দিন।
আপনার মোবাইলে ৬ সংখ্যার ভেরিফিকেশন কোড চলে গেলে সেটি যাচাইকরন কোডের ঘরে বসিয়ে “বহাল” চাপুন। নাম্বার ভেরিফিকেশন হয়ে গেলে আপনাকে নিয়ে যাবে ফেস ভেরিফিকেশন করার জন্য।
Face Verification
অ্যাকাউন্ট রেজিস্ট্রেশনের শেষ ধাপে NID Wallet App এর মাধ্যমে Face Verification করে প্রোফাইলে প্রবেশ করুন। ফেস ভেরিফিকেশন করতে ওয়েবসাইটে প্রদর্শিত QR Code স্ক্যান করুন।
NID wallet অ্যাপে ফেস স্ক্যান শুরু হলে যার ভোটার আইডি সংশোধন করা হবে তার মুখমণ্ডল ডানে বামে নাড়িয়ে একাউন্ট রেজিস্ট্রেশনের কাজ শেষ করতে হবে। এর মাধ্যমে জাতীয় পরিচয়পত্র যাচাই করা হয় যেন nid card এর আসল গ্রাহকই কেবল একাউন্ট এক্সেস করতে পারে।
Face Verification ধাপ শেষ হলে আপনার অ্যাকাউন্ট পাসওয়ার্ড সেট করতে বলা হবে। চাইলে পাসওয়ার্ড দিতে পারেন, আর না চাইলে এড়িয়ে যান। এখানে পাসওয়ার্ড দেয়ার সুবিধে হলো পরবর্তীতে আপনার অ্যাকাউনন্টে লগ-ইন করার সময় আবার ভেরিফিকেশন গুলো করার প্রয়োজন হয় না। আইডি কার্ডের নাম্বার এবং পাসওয়ার্ড দিয়েই লগইন করা যায়।
Step2: ভোটার আইডি তথ্য সংশোধন
অ্যাকাউন্ট রেজিস্ট্রেশনের ধাপটি সফলভাবে করতে পারলে এখন nid website এ লগইন অবস্থায় আছেন। হোম থেকে প্রোফাইল টেব এ চলে যান। জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন ৩টি প্রধান ক্যাটাগরিতে বিভক্ত।
- ব্যক্তিগত তথ্য সংশোধন
- ঠিকানা পরিবর্তন/সংশোধন
- অন্যান্য তথ্য সংশোধন
ব্যক্তিগত তথ্য সংশোধন
ব্যক্তিগত তথ্য সংশোধনের তালিকায় নিজের নাম (বাংলা এবং ইংরেজি), জন্ম তারিখ, পিতার মাতার নামের ভুল সংশোধন করাতে পারবেন। ব্যক্তিগত তথ্য সংশোধনের অধিনে যে সকল তথ্য পরিবর্তন করা যায় তা হল
- ব্যক্তির নিজের নাম (বাংলা)
- ব্যক্তির নিজের নাম (English)
- জন্ম তারিখ পরিবর্তন
- জন্ম নিবন্ধন নাম্বার
- লিঙ্গ
- জন্মস্থান
- পিতার নাম সংশোধন (বাংলা)
- পিতার ভোটার আইডি কার্ডের নাম্বার
- মায়ের নাম সংশোধন (বাংলা)
- মায়ের ভোটার আইডি কার্ডের নাম্বার
এই তালিকায় থাকা এক বা একাধিক তথ্য পরিবর্তন বা সংশোধন করার জন্য ব্যক্তিগত তথ্য টেব থেকে “এডিট” বাটনে চাপতে হবে। আপনি যে তথ্য সংশোধন করতে চান তা বাছাই করুন।
আপনি যে তথ্যটি সংশোধন করতে চান, তার বাম পাশের টিক অপশনে ক্লিক করুন। এভাবে আপনার ভুল তথ্যগুলো প্রমাণপত্রের সাথে মিল রেখে সঠিকভাবে টাইপ করুন। তারপর, পরবর্তী বাটনে ক্লিক করুন। এখানে আপনার সংশোধন করা তথ্যের পূর্বরুপ ও সংশোধিত রুপ দেখতে পাবেন। সব ঠিক থাকলে আবারও পরবর্তী বাটনে ক্লিক করুন।
সংশোধনি তথ্য পুনঃযাচাই
এই ধাপে আপনি যে সব তথ্য পরিবর্তন করতে চলেছেন তার একটি সারাংশ দেখতে পাবেন। আপনার জাতীয় পরিচয় পত্রে আগে কি ছিলো এবং বর্তমানে চাহিত সংশোধন তথ্যের একটি তালিকায় দেখাবে। এখন এটি ক্রস ম্যাচ করে চেক করুন। সবকিছু ঠিক থাকলে পরবর্তী বাটনে চাপুন।
ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে কি কি ডকুমেন্টস প্রয়োজন হয় এবং কোন ধরনের পরিবর্তনের জন্য কি কি ডকুমেন্ট আপলোড করতে হয় বিস্তারিত জানতে পারেন।
Step3: ফি প্রদান
জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধনের জন্য নির্ধারিত সরকারি ফি জমা দিতে হয়। সংশোধন ফি সংশোধনের ধরণ অনুসারে ভিন্ন ভিন্ন হয়। প্রথম দিকেই ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন ফিসের একটি তালিকা প্রকাশ করেছি। তালিকা থেকে দেখে নিন আপনার পরিবর্তনের জন্য কত টাকা ফি দিতে হবে।
বর্তমানে সংশোধন ফি বিকাশ, রকেট ও নগদ একাউন্ট ব্যাবহার করে পরিশোধ করা যায়। আপনার কাছে যে মোবাইল ব্যাংকিং একাউন্ট রয়েছে সেটি দিয়েই জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন ফি জমা দিতে পারবেন।
জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন ফি জমা দেয়ার নিয়ম
জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধন ফি জমা দেয়ার জন্য যে কোন মোবাইল ব্যাংকিং একাউন্ট থেকে সংশোধন ফি জমা দেয়া যায়। বিকাশ, রকেট এবং নগদ ব্যাবহার করে টাকা জমা দেয়া যায়। বাংলাদেশে বিকাশ একাউন্ট বেশি জনপ্রিয় হওয়ায়, বিকাশে ভোটার আইডি সংশোধন ফি জমা দেয়ার নিয়ন দেখানো হলো।
বিকাশে জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন ফি পরিশোধ
বিকাশের মাধ্যমে NID Correction Fee দেয়ার জন্য প্রথমে বিকাশ অ্যাপে প্রবেশ করুন। বিকাশের ড্যাশবোর্ড থেকে পে বিল অপশন বাছাই করুন। তারপর সরকারি ফি থেকে NID Service সিলেক্ট করুন। আবেদনের ধরন এবং আইডি কার্ডের নাম্বার দিয়ে পেমেন্ট করুন।
সংশোধনের ধরন বাছাই করলে বিকাশ অ্যাপ আপনাকে কত টাকা পেমেন্ট করতে হবে তা দেখাবে। আপনার বিকাশে পর্যাপ্ত টাকা থাকলে বিকাশের পিন দিয়ে পেমেন্ট করুন বাটনে চাপলে পেমেন্ট হয়ে যাবে। এখানে পেমেন্ট দেয়া হয়ে গেলে NID ওয়েবসাইটে আপনার একাউন্টে টাকা জমা হয়ে যাবে।
Step4: প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট আপলোড
আপনি আইডি কার্ডের যে তথ্য পরিবর্তনের জন্য আবেদন জমা দিতে চলেছেন, তা প্রমান করার জন্য প্রয়োজনীয় প্রমাণপত্র আপলোড কতে হবে। ব্যক্তিগত তথ্য সংশোধনের জন্য সবথেকে কার্যকর প্রমান হলো শিক্ষাগত যোজ্ঞতার সনদ, পাসপোর্ট কিংবা ড্রাইভিং লাইসেন্স। তার পাশাপাশি অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ আপলোড করতে হবে।
পিতা মাতার নামের বানান পরিবর্তন করতে হলে মা-বাবার আইডি কার্ডের স্ক্যান কপি এবং ভাই বোনের আইডি কার্ডের স্ক্যান কপি আপলোড করতে হয়। ঠিকানা পরিবর্তনের জন্য আবেদন করলে বিদ্যুৎ বিলের কাগজ বা যে কোন ইউটিলিটি বিলের কপি আপলোড করতে হয়।
ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন আবেদন সাবমিট হয়ে গেলে আপনি চাইলে সংশোধন ফরম ডাউনলোড করে রাখতে পারেন। আবেদন অনুমোদন হয়ে গেলে স্থানীয় নির্বাচন কমিশন অফিস থেকে আপনার সংশোধিত আইডি কার্ড সংগ্রহ করতে এই আবেদন ফরমটি প্রয়োজন হতে পারে। তবে অনলাইনে জাতীয় পরিচয় পত্র ডাউনলোড করতে সংশোধন ফরম দরকার নেই।
Step5: সংশোধিত আইডি কার্ড ডাউনলোড
আপনার জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন আবেদন সফল ভাবে সাবমিট হলে এবং সাথে যথাযথ ডকুমেন্ট আপলোড দিলে সর্বোচ্চ ৪৫ দিনের মধ্যে আবেদন অনুমোদন হয়ে যায়। সচারাচর ৩ সপ্তাহের মধ্যেই সংশোধন আবেদন এপ্রোভ হয়ে যায়।
আপনার আবেদন অনুমোদন পেলে ফোনে মেসেজের মাধ্যমে জানিয়ে দেয়া হবে। তারপর আপনি সেটি অনলাইন থেকে ডাউনলোড করে লেমেনেটিং করে ব্যাবহার করতে পারবেন। আপনি চাইলে আপনার সংশোধিত ভোটার আইডি কার্ড উপজিলা নির্বাচন কমিশন অফিস থেকে সংগ্রহ করতে পারেন।
ভোটার আইডি কার্ডের ঠিকানা পরিবর্তন
জাতীয় পরিচয় পত্রের ঠিকানা পরিবর্তন করার জন্য অনলাইনে আবেদন করা যায় না। ঠিকানা পরিবর্তন করার জন্য ভোটার এলাকা স্থানান্তর ফরম পূরণ করে নির্বাচন অফিসে জমা দিতে হয়। এই ঠিকানা পরিবর্তন ফরম কে ১৩ নং ফরম বলা হয়।
ভোটার এলাকা পরিবর্তনের যথার্থ কারণ ও প্রমাণ থাকলে সহজেই জাতীয় পরিচয় পত্রের ঠিকানা পরিবর্তন করা যায়। আগের ঠিকানায় কত সময় ধরে বসবাস করছেন, বর্তমানে যে এলাকায় ভোটার হস্থান্তর করছেন তার কারণ উল্লেখ করতে হয় আবেদন ফরমে।
ভোটার এলাকা পরিবর্তন ফরম pdf
অনলাইনে জাতীয় পরিচয় পত্রের প্রায় সকল তথ্য পরিবর্তন/সংশোধন করার অপশন থাকলেও ভোটার এলাকা পরিবর্তন করার বিষয়টি এখন অফলাইন ভিত্তিক রয়ে গেছে। ভোটার এলাকা পরিবর্তন করতে হলে Votar Area Migration Form পূরণ করে যে এলাকায় ভোটার হতে চান সে এলাকার নির্বাচন কমিশন অফিসে জমা দিতে হবে।
Migration Form পূরণ করে সাথে ভোটার এলাকা পরিপরতনের কারণ/প্রমানাধি নিয়ে স্থানীয় নির্বাচন অফিসে যেতে হবে। বাসস্থান পরিবর্তন বা চাকরির বদলির কারণে ভোটার এলাকা পরিবর্তন করতে চাইলে Job Posting Latter আবেদন ফরমের সাথে জমা দিতে হবে। আর বাসথান পরিবর্তনের কারণে ঠিকানা পরিবর্তন করতে চাইলে, বর্তমান ঠিকানার বিদ্যুৎ বিলের কাগজ বা যে কোন ইউটিলিটি বিলের কপি সাথে জমা দিতে হবে।
ভোটার আইডি কার্ড জন্ম তারিখ সংশোধন
জাতীয় পরিচয়পত্রের জন্ম তারিখে ভুল থাকলে তা পরিবর্তন করার জন্য নির্বাচন ওয়েবসাইটের ভোটার আইডি পোর্টালে লগইন করুন। তারপর প্রোফাইল থেকে ব্যক্তিগত তথ্য অপশন থেকে এডিট বাটনে চেপে জন্ম তারিখের ঘরে টিক চিহ্ন দিয়ে, আপনার চাহিত জন্মতারিখ লিখুন।
সংশোধন ফি পরিশোধ করে আবেদন জমা দিন। ডকুমেন্ট আপলোড করার সময় আপনার চাহিত জন্ম তারিখ পমানিত হয় এমন প্রমাণপত্র জমা দিন। জন্ম তারিখ সংশোধন করতে বেশি কার্যকরি ডকুমেন্ট হলো SSC, HSC and JSC Board Certificate. শিক্ষাগত সনদ না থাকলে পাসপোর্ট কিংবা ড্রাইভিং লাইসেনস আপলোড দিলেও অনুমোদন পাওয়া যায়।
তবে যে ডকুমেন্টই প্রমাণ হিসেবে আপলোড করা হউক না কেন, আপনায়ে সংশোধন আবেদনের সাথে ডকুমেন্টের মিল থাকতে হবে। একটি উদাহরণ দিলে বিষয়টি আরো স্পষ্ট হয়ে যাবে…
ধরুন আপনার আইডি কার্ডে নাম ছিলো “কাবুল মিয়া” আর এখন তা সংশোধন করে “বাবুল মিয়া” করতে চাচ্ছেন। তাহলে আপনি এর প্রমাণ হিসেবে যে সনদ আপলোড করবেন সে সনদে নাম বাবুল মিয়া থাকতে হবে। প্রমাণ পত্রে এক রকম আপনি অন্যরকম করতে চাইলে এই আবেদন কাজে আসবে না।
জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধন করতে কত দিন লাগে
জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন হয়ে রিইস্যু হতে আনুমানিক ৬০ দিন সময় লাগে। তবে এটি নির্ভর করে আবেদনের ধরণ ও ক্যাটাগরির উপর। অনলাইনে উপযুক্ত প্রমাণপত্র আপলোড করে সঠিকভাবে আবেদন করার পর ১৪ থেকে ২১ দিনের মধ্যেই আবেদন অনুমোদন হয়ে যায়।
ক্যাটাগরি
বিষয়
দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি
ক এবং ক১
নাম সংশোধন (বানান জনিত ভুল)
উপজেলা নির্বাচন অফিস
খ এবং খ১
বয়স সংশোধন (১-৪ বছর)
জেলা নির্বাচন অফিসার
গ এবং গ১
বয়স সংশোধন ৪ বছরের বেশি
আঞ্চলিক নির্বাচন অফিস
ঘ
জটিল / আমুল পরিবর্তন
মহা পরিচালক
আবেদনের ক্যাটাগরি অনুসারে কিছু কিছু আবেদন থানা/উপজেলা নির্বাচন অফিসে নিষ্পত্তি হয়। কিছু কিছু আবেদব এপ্রোভ হয় জেলা নির্বাচন অফিসে। জটিল আবেদন গুলো আঞ্চলিক নির্বাচন অফিস এমনকি নির্বাচন কমিশনের মহা সচিব নিজে অনুমোদন করে থাকে। তাই ক্যাটাগরি অনুসারে সংশোধনের সময় কাল ভিন্ন হয়।
তবে নির্বাচন চলাকালীন সময়ে এই সময়সীমা বেড়ে যেতে পারে। আবেদনে কোন জটিলতা দেখা দিলে অনুমোদন পেতে বিলম্ব হতে পারে। আবেদনের প্রমাণাদি পুনরায় ভেরিফিকেশন করার জন্য কিছু ক্ষেত্রে আরো কিছু দিন সময় বেশি লাগতে পারে।
জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন সম্পর্কিত প্রশ্ন উত্তর
জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন সম্পর্কে সচারাচর জিজ্ঞেসিত হয় এমন কিছু প্রশ্ন এবং তার উত্তর নিয়ে আলোচনা করা হলো। এখন পর্যন্ত আপনার মনে কোন প্রশ্ন ঘুরা ঘুরি করলে, নিচের প্রশ্ন উত্তর থেকে তার সমাধান পেয়ে যাবেন বলে আমার বিশ্বাস।
ভোটার আইডি কার্ড কতবার সংশোধন করা যায়?
আইডি কার্ড সংশোধনের কোন সীমা এখনো নির্ধারণ করা হয়নি। তবে একত্ব তথ্য একবার পরিবর্তন করতে পারবেন। প্রথমবার তথ্য সংশোধনের জন্য ২৩০ টাকা, দ্বিতীয় বার(একবার যা সংশোধন হয়েছে তা ছাড়া) ৩৪৫টাকা এর পর প্রতিবার ৪৬০টাকা ফি দিতে হবে।
বাবা মায়ের নামে ভুল থাকলে সংশোধন করতে কি লাগে?
আপনার nid card এ পিতা মাতার নামে ভুল থাকলে তা পরিবর্তন করতে উপড়ে দেখানো নিয়মেই আবেদন করবেন। এখানে আবেদন জমা দেয়ায়ে আগে প্রমাণে ডকুমেন্ট হিসেবে আপনার বাবা-মায়ের জাতীয় পরিচয়পত্রের স্ক্যান কপি, ভাই বোনের আইডি কার্ডের স্ক্যান কপি আর আপনার কোন বোর্ড পরিক্ষার সনদ/ড্রাইভিং লাইসেন্স/ পাসপোর্ট স্ক্যান করে আপলোড করতে হবে।
ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে কত দিন লাগে?
সংশোধনের ধরন ও ক্যাটাগরির উপর নির্ভর করে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন অনুমোদন পেতে ৩০ থেকে ৪৫দিন সময় লাগে। আবেদনের সাথে আপলোড করা ডকুমেন্ট সামঞ্জস্য হোলে ১৫ থাকে ২১দিনের মধ্যেই তথ্য পরিবর্তন হয়ে যায়।
NID Card এর নাম সংশোধন করতে কি কি লাগে?
NID Card এর নাম সংশোধন করতে সবথেকে কার্যকরী ডকুমেন্ট যে কোন বোর্ড পরীক্ষার সনদ (JSC, SSC, HSC) পড়ালেখা না করলে তার ড্রাইভিং লাইসেন্স অথবা ই পাসপোর্ট। এগুলোর কিছুই না থাকলে বিয়ের কাবিন নামা দিয়ে আবেদন করতে হয়।
মোবাইল নাম্বার পরিবর্তন করবো কি করে?
আইডি কার্ডের মোবাইল নাম্বার পরিবর্তন করার জন্য NID Website এ রেজিস্ট্রেশন করার সময় ফোন নাম্বার ভেরিফিকেশন করতে OTP পাঠানো হয়। সে ধাপে মোবাইল পরিবর্তন করুন বাটনে চেপে আপনার নতুন মোবাইল নাম্বার দিলেই মোবাইল পরিবর্তন হওয়র যাবে।
স্মার্ট কার্ড সংশোধন ফি কত?
জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন করতে সর্বনিন্ম ২৩০টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৩৪৫টাকা ফি প্রদান করতে হয়। আবেদনের ক্যাটাগরি ও ধরনের উপর সংশোধন ফি নির্ভর করে।
আইডি কার্ডের বয়স বাড়াবেন কি করে?
নিজের মন মতো ভোটার আইডি কার্ডের বয়স বাড়ানো বা কমানো যায় না। বয়স পরিবর্তনের স্বপক্ষে প্রমাণ থাকলেই কেবল জন্মতারিখ পরিবর্তন করা যায়।
স্মার্ট কার্ড কিভাবে সংশোধন করা যায়?
স্মার্ট কার্ড সংশোধন করার জন্য প্রথমে services.nidw.gov.bd ওয়েবসাইটে আপনার স্মার্ট কার্ড নম্বর ও জন্ম তারিখ দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করুন। ফেইস ভেরিফিকেশন করে লগইন করুন। এবার প্রোফাইল অপশনে যান এবং এডিট লিংকে ক্লিক করে তথ্য সংশোধন করুন। সংশোধন ফি পরিশোধ ও প্রয়োজনীয় প্রমাণপত্র আপলোড করে আবেদন জমা দিন। আবেদন অনুমোদন হলে তথ্য সংশোধন হবে।
কিভাবে এন আইডি কার্ডে রক্তের গ্রুপ যুক্ত/পরিবর্তন করব?
এনআইডি কার্ডে রক্তের গ্রুপ থাকা জরুরি। কোন জরুরি মুহূর্তে আইডি কার্ড দেখেই রক্তের গ্রুপ সম্পর্কে জানতে পারবে। আইডি কার্ডে রক্তের গ্রুপ যুক্ত / পরিবর্তন করতে স্বাস্থ্য ক্লিনিক থেকে Blood group Test Report আবেদনের সাথে জমা দিতে হবে।
..বিস্তারিত তথ্য..
জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন
Table of Contents
জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন করার নিয়ম ও অনলাইনে ভোটার এনআইডি কার্ড সংশোধন করার পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনায় আপনাকে স্বাগতম। নিজে নিজে আইডি কার্ড সংশোধন করার “NID Card Correction” সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটি ধাপে ধাপে সাজানো হয়েছে।
NID Card এর তথ্যে কোন প্রকার ভুল থাকলে তা অনলাইনে আবেদন করার মাধ্যমে সংশোধন করা যায়। সাধারণত নতুন ভোটার আবেদন করার সময় কেউ ভুল তথ্য প্রদান করলে অথবা কম্পিউটার অপারেটর ভুল টাইপিং করার ফলে আইডি কার্ডে ভুল হয়ে থাকে। নিয়ম মেনে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট সহ সংশোধন আবেদন করলে NID Card এর যেকোনো ভুল সংশোধন করা যায়।
জাতীয় পরিচয়পত্রের যেকোন ভুল এখন অনলাইনে সংশোধন আবেদনের মাধ্যমে পরিবর্তন করা যায়। এনআইডি কার্ডে নিজের নামে ভুল হলে অথবা বাবা-মার নাম ভুল লিপিবদ্ধ হলে তা খুব সহজে সংশোধন করা যায়। জন্ম তারিখে ভুল থাকলে NID Correction Application করে সংশোধন করা যাবে।
জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন নিয়ম
জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন করার জন্য প্রথমে services.nidw.gov.bd এই ওয়েবসাইটি ভিজিট করুন। এখন NID নাম্বার, জন্ম তারিখ দিয়ে একাউন্ট রেজিস্টার করুন। তারপর আপনার ঠিকান, মোবাইল নাম্বার এবং ফেইস ভেরিফিকেশন করে একাউন্টে লগইন করুন।
একাউন্ট তৈরি হয়ে গেলে আপনার NID একাউন্টের ড্যাশবোর্ড থেকে এডিট প্রোফাইলে ক্লিক করে প্রয়োজনীয় তথ্য সংশোধন করুন। সবশেষ সংশোধন ফি জমা দিয়ে অনলাইনে আবেদন জমা দিন। আবেদন এপ্রোভ হলে প্রোফাইল মেনু থেকে ডাউনলোড অপশনে ক্লিক করে সংশোধিত NID Card Download করুন।
ভোটার আইডি সংশোধন আবেদন জমা দেয়ার আগে খেয়াল রাখতে হবে যাতে চাহিত সংশোধনের জন্য প্রয়োজনীয় প্রমানপত্র আপলোড করতে হবে। আপনার ভোটার আবেদনে যে তথ্য পরিবর্তন করতে চান তা তার সত্যতা প্রমান করতে সত্যায়িত কাগজপত্র আবেদনের সাথে জমা দিতে হয়।
আইডি কার্ড সংশোধন আবেদন সামঞ্জস্য এবং বৈধ হলে সাধারনত ২৫ দিন থেকে ৩০ দিন এর মধ্যে জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন আবেদন অনুমোদন পেয়ে যায়। তবে নির্বাচন চলাকালীন সময়ে এই অনুমোদনের সময়সীমা পরিবর্তন হতে পারে।
ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে কি কি লাগে
ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে কি কি কাগজপত্র জমা দিতে হবে, তা নির্ভর করবে জাতীয় পরিচয়পত্রের কি ধরনের তথ্য পরিবর্তন করা হবে তার উপর। NID Card সংশোধন করতে শিক্ষাগত যোগ্যতা সনদ, অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ, ড্রাইভিং লাইসেন্স এবং ই পাসপোর্ট প্রমান হিসেবে কার্যকর ভুমিকা পালন করে
উপরে বর্ণিত মৌলিক ডকুমেন্ট গুলো না থাকলে, কিছু কিছু ক্ষেত্রে এফিডেভিট (হলফনামা), নাগরিক সনদ, ওয়ারিশ সনদ আপলোড করতে হয়। আইডি কার্ডে স্বামী কিংবা স্ত্রীর নাম সংশোধন (পরিবর্তন) করতে কাবিন নামার প্রয়োজন হয়।
তেমনি ভাবে জাতীয় পরিচয়পত্রে রক্তের গ্রুপ না দেয়া থাকলে তা যুক্ত করতে অথবা (পরিবর্তন) করতে মেডিক্যাল ক্লিনিক হতে রক্তের গ্রুপিং টেস্ট রিপোর্ট আপলোড করতে হয়। ঠিকানা সংশোধন করতে বিদ্যুৎ বিলের কাগজ বা ইউটিলিটি বিলের কাগজ জমা দিতে হবে।
জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন করতে কি কি ডকুমেন্ট লাগে তা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে কি কি লাগে এই লিখাটি পড়ুন।
ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে কত টাকা লাগে
ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন বা জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন করতে সর্বনিন্ম ২৩০টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৩৪৫টাকা ফি প্রদান করতে হয়। আবেদনের ধরনের উপর সংশোধন ফি নির্ভর করে। ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন ৩টি প্রধান শ্রেণিতে বিভক্ত-
- ব্যক্তিগত তথ্য সংশোধন
- অন্যান্য তথ্য
- ঠিকানা পরিবর্তন
ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন ফি কত তা একটি টেবিলে উপস্থাপন করা হলো
সংশোধনের ধরণ
সংশোধন ফি
ব্যক্তিগত তথ্য সংশোধন
২৩০ টাকা
অন্যান্য তথ্য সংশোধন
১১৫ টাকা
উভয় তথ্য সংশোধন
৩৭৫ টাকা
আইডি কার্ড রিইস্যু (Urgent)
আইডি কার্ড রিইস্যু (Regular)
২৩০ টাকা
জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন ফি তালিকা
এন আইডি কার্ডের সংশোধন ফি বিকাশ , রকেট ও নগদ মোবাইল ব্যাংকিং ব্যাবহার করে পরিশোধ করা যায়। বিকাশে NID নাম্বার দিয়ে ভোটার আইডি সংশোধন ফি জমা দেয়া যায়।
ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করার নিয়ম
অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করার জন্য আপনাকে প্রথমে এনআইডি ওয়েবসাইটে আপনার NID Number, জন্ম তারিখ এবং একটি সিকিউরিটি ক্যাপচা পূরণ করে অ্যাকাউন্ট রেজিস্টার করতে হবে। তারপর ফেস ভেরিফিকেশন করে অ্যাকাউন্ট লগইন করুন। আপনার প্রোফাইলের এডিট বাটনে ক্লিক করে প্রয়োজনীয় তথ্য পরিবর্তন করে আবেদন জমা দিন।
সবার বুঝার সুবিধার জন্য বিষয়টি কয়েকটি ছোট ছোট ধাপে বিভক্ত করা হয়েছে। চলুন আইডি কার্ড সংশোধন করার পুরো প্রক্রিয়াটি ধাপে ধাপে দেখে নেই।
Step1: অ্যাকাউন্ট রেজিস্ট্রেশন
জাতীয় পরিচয় পত্র ওয়েবসাইটে রেজিস্ট্রেশন করার জন্য প্রথমে ভিজিট করতে হবে https://services.nidw.gov.bd/nid-pub/ ওয়েবসাইটে। ভোটার আইডি কার্ডের নাম্বার, জন্ম তারিখ, ঠিকানা, মোবাইল নাম্বার ভেরিফিকেশন করে অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে হবে।
NID BD অ্যাকাউন্ট রেজিস্ট্রেশন
ভোটার আইডি তথ্য প্রদান
অ্যাকাউন্ট তৈরির এই পর্যায়ে যার NID Card information change করতে চাচ্ছেন তার জাতীয় পরিচয়পত্রের নাম্বার, জন্মতারিখ দিয়ে ফরম ফিলাপ করতে হবে। এনআইডি কার্ডের নাম্বার জানা না থাকলে ভোটার স্লিপের ফরম নাম্বার ব্যাবহার করতে পারবেন।
ভোটার আইডি তথ্য দিয়ে ফরম পূরণ
জাতীয় পরিচয় পত্রের ঠিকানা যাচাই
ভোটার আইডি কার্ডের তথ্য সঠিক ভাবে পূরণ করা হলে, এখন আপনাকে জাতীয় পরিচয় পত্রের ঠিকানা যাচাই করতে বলা হবে। এনআইডি কার্ডের আবেদনে বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানা যেমন দেওয়া ছিলো ঠিক তেমন করে ঠিকানা দিতে হবে।
ঠিকানা যাচাই
মোবাইল নাম্বার ভেরিফিকেশন
আইডি কার্ডে আপনার যে মোবাইল নাম্বার দেয়া ছিলো সেই নাম্বারটির প্রথমের কিছু সংখ্যা এবং শেষের ৩টি নাম্বার দেখানো হবে। এই মোবাইল নাম্বার আপনার কাছে থাকলে কোড পাঠানোর জন্য “বার্তা পাঠান” বাটনে চাপুন। আর ফোন নাম্বারটি না থাকলে নতুন একটি নাম্বার দিন।
আপনার মোবাইলে ৬ সংখ্যার ভেরিফিকেশন কোড চলে গেলে সেটি যাচাইকরন কোডের ঘরে বসিয়ে “বহাল” চাপুন। নাম্বার ভেরিফিকেশন হয়ে গেলে আপনাকে নিয়ে যাবে ফেস ভেরিফিকেশন করার জন্য।
Face Verification
অ্যাকাউন্ট রেজিস্ট্রেশনের শেষ ধাপে NID Wallet App এর মাধ্যমে Face Verification করে প্রোফাইলে প্রবেশ করুন। ফেস ভেরিফিকেশন করতে ওয়েবসাইটে প্রদর্শিত QR Code স্ক্যান করুন।
NID wallet অ্যাপে ফেস স্ক্যান শুরু হলে যার ভোটার আইডি সংশোধন করা হবে তার মুখমণ্ডল ডানে বামে নাড়িয়ে একাউন্ট রেজিস্ট্রেশনের কাজ শেষ করতে হবে। এর মাধ্যমে জাতীয় পরিচয়পত্র যাচাই করা হয় যেন nid card এর আসল গ্রাহকই কেবল একাউন্ট এক্সেস করতে পারে।
Face Verification ধাপ শেষ হলে আপনার অ্যাকাউন্ট পাসওয়ার্ড সেট করতে বলা হবে। চাইলে পাসওয়ার্ড দিতে পারেন, আর না চাইলে এড়িয়ে যান। এখানে পাসওয়ার্ড দেয়ার সুবিধে হলো পরবর্তীতে আপনার অ্যাকাউনন্টে লগ-ইন করার সময় আবার ভেরিফিকেশন গুলো করার প্রয়োজন হয় না। আইডি কার্ডের নাম্বার এবং পাসওয়ার্ড দিয়েই লগইন করা যায়।
Step2: ভোটার আইডি তথ্য সংশোধন
অ্যাকাউন্ট রেজিস্ট্রেশনের ধাপটি সফলভাবে করতে পারলে এখন nid website এ লগইন অবস্থায় আছেন। হোম থেকে প্রোফাইল টেব এ চলে যান। জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন ৩টি প্রধান ক্যাটাগরিতে বিভক্ত।
- ব্যক্তিগত তথ্য সংশোধন
- ঠিকানা পরিবর্তন/সংশোধন
- অন্যান্য তথ্য সংশোধন
ব্যক্তিগত তথ্য সংশোধন
ব্যক্তিগত তথ্য সংশোধনের তালিকায় নিজের নাম (বাংলা এবং ইংরেজি), জন্ম তারিখ, পিতার মাতার নামের ভুল সংশোধন করাতে পারবেন। ব্যক্তিগত তথ্য সংশোধনের অধিনে যে সকল তথ্য পরিবর্তন করা যায় তা হল
- ব্যক্তির নিজের নাম (বাংলা)
- ব্যক্তির নিজের নাম (English)
- জন্ম তারিখ পরিবর্তন
- জন্ম নিবন্ধন নাম্বার
- লিঙ্গ
- জন্মস্থান
- পিতার নাম সংশোধন (বাংলা)
- পিতার ভোটার আইডি কার্ডের নাম্বার
- মায়ের নাম সংশোধন (বাংলা)
- মায়ের ভোটার আইডি কার্ডের নাম্বার
এই তালিকায় থাকা এক বা একাধিক তথ্য পরিবর্তন বা সংশোধন করার জন্য ব্যক্তিগত তথ্য টেব থেকে “এডিট” বাটনে চাপতে হবে। আপনি যে তথ্য সংশোধন করতে চান তা বাছাই করুন।
আপনি যে তথ্যটি সংশোধন করতে চান, তার বাম পাশের টিক অপশনে ক্লিক করুন। এভাবে আপনার ভুল তথ্যগুলো প্রমাণপত্রের সাথে মিল রেখে সঠিকভাবে টাইপ করুন। তারপর, পরবর্তী বাটনে ক্লিক করুন। এখানে আপনার সংশোধন করা তথ্যের পূর্বরুপ ও সংশোধিত রুপ দেখতে পাবেন। সব ঠিক থাকলে আবারও পরবর্তী বাটনে ক্লিক করুন।
সংশোধনি তথ্য পুনঃযাচাই
এই ধাপে আপনি যে সব তথ্য পরিবর্তন করতে চলেছেন তার একটি সারাংশ দেখতে পাবেন। আপনার জাতীয় পরিচয় পত্রে আগে কি ছিলো এবং বর্তমানে চাহিত সংশোধন তথ্যের একটি তালিকায় দেখাবে। এখন এটি ক্রস ম্যাচ করে চেক করুন। সবকিছু ঠিক থাকলে পরবর্তী বাটনে চাপুন।
ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে কি কি ডকুমেন্টস প্রয়োজন হয় এবং কোন ধরনের পরিবর্তনের জন্য কি কি ডকুমেন্ট আপলোড করতে হয় বিস্তারিত জানতে পারেন।
Step3: ফি প্রদান
জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধনের জন্য নির্ধারিত সরকারি ফি জমা দিতে হয়। সংশোধন ফি সংশোধনের ধরণ অনুসারে ভিন্ন ভিন্ন হয়। প্রথম দিকেই ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন ফিসের একটি তালিকা প্রকাশ করেছি। তালিকা থেকে দেখে নিন আপনার পরিবর্তনের জন্য কত টাকা ফি দিতে হবে।
বর্তমানে সংশোধন ফি বিকাশ, রকেট ও নগদ একাউন্ট ব্যাবহার করে পরিশোধ করা যায়। আপনার কাছে যে মোবাইল ব্যাংকিং একাউন্ট রয়েছে সেটি দিয়েই জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন ফি জমা দিতে পারবেন।
জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন ফি জমা দেয়ার নিয়ম
জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধন ফি জমা দেয়ার জন্য যে কোন মোবাইল ব্যাংকিং একাউন্ট থেকে সংশোধন ফি জমা দেয়া যায়। বিকাশ, রকেট এবং নগদ ব্যাবহার করে টাকা জমা দেয়া যায়। বাংলাদেশে বিকাশ একাউন্ট বেশি জনপ্রিয় হওয়ায়, বিকাশে ভোটার আইডি সংশোধন ফি জমা দেয়ার নিয়ন দেখানো হলো।
বিকাশে জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন ফি পরিশোধ
বিকাশের মাধ্যমে NID Correction Fee দেয়ার জন্য প্রথমে বিকাশ অ্যাপে প্রবেশ করুন। বিকাশের ড্যাশবোর্ড থেকে পে বিল অপশন বাছাই করুন। তারপর সরকারি ফি থেকে NID Service সিলেক্ট করুন। আবেদনের ধরন এবং আইডি কার্ডের নাম্বার দিয়ে পেমেন্ট করুন।
সংশোধনের ধরন বাছাই করলে বিকাশ অ্যাপ আপনাকে কত টাকা পেমেন্ট করতে হবে তা দেখাবে। আপনার বিকাশে পর্যাপ্ত টাকা থাকলে বিকাশের পিন দিয়ে পেমেন্ট করুন বাটনে চাপলে পেমেন্ট হয়ে যাবে। এখানে পেমেন্ট দেয়া হয়ে গেলে NID ওয়েবসাইটে আপনার একাউন্টে টাকা জমা হয়ে যাবে।
Step4: প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট আপলোড
আপনি আইডি কার্ডের যে তথ্য পরিবর্তনের জন্য আবেদন জমা দিতে চলেছেন, তা প্রমান করার জন্য প্রয়োজনীয় প্রমাণপত্র আপলোড কতে হবে। ব্যক্তিগত তথ্য সংশোধনের জন্য সবথেকে কার্যকর প্রমান হলো শিক্ষাগত যোজ্ঞতার সনদ, পাসপোর্ট কিংবা ড্রাইভিং লাইসেন্স। তার পাশাপাশি অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ আপলোড করতে হবে।
পিতা মাতার নামের বানান পরিবর্তন করতে হলে মা-বাবার আইডি কার্ডের স্ক্যান কপি এবং ভাই বোনের আইডি কার্ডের স্ক্যান কপি আপলোড করতে হয়। ঠিকানা পরিবর্তনের জন্য আবেদন করলে বিদ্যুৎ বিলের কাগজ বা যে কোন ইউটিলিটি বিলের কপি আপলোড করতে হয়।
ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন আবেদন সাবমিট হয়ে গেলে আপনি চাইলে সংশোধন ফরম ডাউনলোড করে রাখতে পারেন। আবেদন অনুমোদন হয়ে গেলে স্থানীয় নির্বাচন কমিশন অফিস থেকে আপনার সংশোধিত আইডি কার্ড সংগ্রহ করতে এই আবেদন ফরমটি প্রয়োজন হতে পারে। তবে অনলাইনে জাতীয় পরিচয় পত্র ডাউনলোড করতে সংশোধন ফরম দরকার নেই।
Step5: সংশোধিত আইডি কার্ড ডাউনলোড
আপনার জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন আবেদন সফল ভাবে সাবমিট হলে এবং সাথে যথাযথ ডকুমেন্ট আপলোড দিলে সর্বোচ্চ ৪৫ দিনের মধ্যে আবেদন অনুমোদন হয়ে যায়। সচারাচর ৩ সপ্তাহের মধ্যেই সংশোধন আবেদন এপ্রোভ হয়ে যায়।
আপনার আবেদন অনুমোদন পেলে ফোনে মেসেজের মাধ্যমে জানিয়ে দেয়া হবে। তারপর আপনি সেটি অনলাইন থেকে ডাউনলোড করে লেমেনেটিং করে ব্যাবহার করতে পারবেন। আপনি চাইলে আপনার সংশোধিত ভোটার আইডি কার্ড উপজিলা নির্বাচন কমিশন অফিস থেকে সংগ্রহ করতে পারেন।
ভোটার আইডি কার্ডের ঠিকানা পরিবর্তন
জাতীয় পরিচয় পত্রের ঠিকানা পরিবর্তন করার জন্য অনলাইনে আবেদন করা যায় না। ঠিকানা পরিবর্তন করার জন্য ভোটার এলাকা স্থানান্তর ফরম পূরণ করে নির্বাচন অফিসে জমা দিতে হয়। এই ঠিকানা পরিবর্তন ফরম কে ১৩ নং ফরম বলা হয়।
ভোটার এলাকা পরিবর্তনের যথার্থ কারণ ও প্রমাণ থাকলে সহজেই জাতীয় পরিচয় পত্রের ঠিকানা পরিবর্তন করা যায়। আগের ঠিকানায় কত সময় ধরে বসবাস করছেন, বর্তমানে যে এলাকায় ভোটার হস্থান্তর করছেন তার কারণ উল্লেখ করতে হয় আবেদন ফরমে।
ভোটার এলাকা পরিবর্তন ফরম pdf
অনলাইনে জাতীয় পরিচয় পত্রের প্রায় সকল তথ্য পরিবর্তন/সংশোধন করার অপশন থাকলেও ভোটার এলাকা পরিবর্তন করার বিষয়টি এখন অফলাইন ভিত্তিক রয়ে গেছে। ভোটার এলাকা পরিবর্তন করতে হলে Votar Area Migration Form পূরণ করে যে এলাকায় ভোটার হতে চান সে এলাকার নির্বাচন কমিশন অফিসে জমা দিতে হবে।
Migration Form পূরণ করে সাথে ভোটার এলাকা পরিপরতনের কারণ/প্রমানাধি নিয়ে স্থানীয় নির্বাচন অফিসে যেতে হবে। বাসস্থান পরিবর্তন বা চাকরির বদলির কারণে ভোটার এলাকা পরিবর্তন করতে চাইলে Job Posting Latter আবেদন ফরমের সাথে জমা দিতে হবে। আর বাসথান পরিবর্তনের কারণে ঠিকানা পরিবর্তন করতে চাইলে, বর্তমান ঠিকানার বিদ্যুৎ বিলের কাগজ বা যে কোন ইউটিলিটি বিলের কপি সাথে জমা দিতে হবে।
ভোটার আইডি কার্ড জন্ম তারিখ সংশোধন
জাতীয় পরিচয়পত্রের জন্ম তারিখে ভুল থাকলে তা পরিবর্তন করার জন্য নির্বাচন ওয়েবসাইটের ভোটার আইডি পোর্টালে লগইন করুন। তারপর প্রোফাইল থেকে ব্যক্তিগত তথ্য অপশন থেকে এডিট বাটনে চেপে জন্ম তারিখের ঘরে টিক চিহ্ন দিয়ে, আপনার চাহিত জন্মতারিখ লিখুন।
সংশোধন ফি পরিশোধ করে আবেদন জমা দিন। ডকুমেন্ট আপলোড করার সময় আপনার চাহিত জন্ম তারিখ পমানিত হয় এমন প্রমাণপত্র জমা দিন। জন্ম তারিখ সংশোধন করতে বেশি কার্যকরি ডকুমেন্ট হলো SSC, HSC and JSC Board Certificate. শিক্ষাগত সনদ না থাকলে পাসপোর্ট কিংবা ড্রাইভিং লাইসেনস আপলোড দিলেও অনুমোদন পাওয়া যায়।
তবে যে ডকুমেন্টই প্রমাণ হিসেবে আপলোড করা হউক না কেন, আপনায়ে সংশোধন আবেদনের সাথে ডকুমেন্টের মিল থাকতে হবে। একটি উদাহরণ দিলে বিষয়টি আরো স্পষ্ট হয়ে যাবে…
ধরুন আপনার আইডি কার্ডে নাম ছিলো “কাবুল মিয়া” আর এখন তা সংশোধন করে “বাবুল মিয়া” করতে চাচ্ছেন। তাহলে আপনি এর প্রমাণ হিসেবে যে সনদ আপলোড করবেন সে সনদে নাম বাবুল মিয়া থাকতে হবে। প্রমাণ পত্রে এক রকম আপনি অন্যরকম করতে চাইলে এই আবেদন কাজে আসবে না।
জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধন করতে কত দিন লাগে
জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন হয়ে রিইস্যু হতে আনুমানিক ৬০ দিন সময় লাগে। তবে এটি নির্ভর করে আবেদনের ধরণ ও ক্যাটাগরির উপর। অনলাইনে উপযুক্ত প্রমাণপত্র আপলোড করে সঠিকভাবে আবেদন করার পর ১৪ থেকে ২১ দিনের মধ্যেই আবেদন অনুমোদন হয়ে যায়।
ক্যাটাগরি
বিষয়
দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি
ক এবং ক১
নাম সংশোধন (বানান জনিত ভুল)
উপজেলা নির্বাচন অফিস
খ এবং খ১
বয়স সংশোধন (১-৪ বছর)
জেলা নির্বাচন অফিসার
গ এবং গ১
বয়স সংশোধন ৪ বছরের বেশি
আঞ্চলিক নির্বাচন অফিস
ঘ
জটিল / আমুল পরিবর্তন
মহা পরিচালক
আবেদনের ক্যাটাগরি অনুসারে কিছু কিছু আবেদন থানা/উপজেলা নির্বাচন অফিসে নিষ্পত্তি হয়। কিছু কিছু আবেদব এপ্রোভ হয় জেলা নির্বাচন অফিসে। জটিল আবেদন গুলো আঞ্চলিক নির্বাচন অফিস এমনকি নির্বাচন কমিশনের মহা সচিব নিজে অনুমোদন করে থাকে। তাই ক্যাটাগরি অনুসারে সংশোধনের সময় কাল ভিন্ন হয়।
তবে নির্বাচন চলাকালীন সময়ে এই সময়সীমা বেড়ে যেতে পারে। আবেদনে কোন জটিলতা দেখা দিলে অনুমোদন পেতে বিলম্ব হতে পারে। আবেদনের প্রমাণাদি পুনরায় ভেরিফিকেশন করার জন্য কিছু ক্ষেত্রে আরো কিছু দিন সময় বেশি লাগতে পারে।
জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন সম্পর্কিত প্রশ্ন উত্তর
জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন সম্পর্কে সচারাচর জিজ্ঞেসিত হয় এমন কিছু প্রশ্ন এবং তার উত্তর নিয়ে আলোচনা করা হলো। এখন পর্যন্ত আপনার মনে কোন প্রশ্ন ঘুরা ঘুরি করলে, নিচের প্রশ্ন উত্তর থেকে তার সমাধান পেয়ে যাবেন বলে আমার বিশ্বাস।
ভোটার আইডি কার্ড কতবার সংশোধন করা যায়?
আইডি কার্ড সংশোধনের কোন সীমা এখনো নির্ধারণ করা হয়নি। তবে একত্ব তথ্য একবার পরিবর্তন করতে পারবেন। প্রথমবার তথ্য সংশোধনের জন্য ২৩০ টাকা, দ্বিতীয় বার(একবার যা সংশোধন হয়েছে তা ছাড়া) ৩৪৫টাকা এর পর প্রতিবার ৪৬০টাকা ফি দিতে হবে।
বাবা মায়ের নামে ভুল থাকলে সংশোধন করতে কি লাগে?
আপনার nid card এ পিতা মাতার নামে ভুল থাকলে তা পরিবর্তন করতে উপড়ে দেখানো নিয়মেই আবেদন করবেন। এখানে আবেদন জমা দেয়ায়ে আগে প্রমাণে ডকুমেন্ট হিসেবে আপনার বাবা-মায়ের জাতীয় পরিচয়পত্রের স্ক্যান কপি, ভাই বোনের আইডি কার্ডের স্ক্যান কপি আর আপনার কোন বোর্ড পরিক্ষার সনদ/ড্রাইভিং লাইসেন্স/ পাসপোর্ট স্ক্যান করে আপলোড করতে হবে।
ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে কত দিন লাগে?
সংশোধনের ধরন ও ক্যাটাগরির উপর নির্ভর করে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন অনুমোদন পেতে ৩০ থেকে ৪৫দিন সময় লাগে। আবেদনের সাথে আপলোড করা ডকুমেন্ট সামঞ্জস্য হোলে ১৫ থাকে ২১দিনের মধ্যেই তথ্য পরিবর্তন হয়ে যায়।
NID Card এর নাম সংশোধন করতে কি কি লাগে?
NID Card এর নাম সংশোধন করতে সবথেকে কার্যকরী ডকুমেন্ট যে কোন বোর্ড পরীক্ষার সনদ (JSC, SSC, HSC) পড়ালেখা না করলে তার ড্রাইভিং লাইসেন্স অথবা ই পাসপোর্ট। এগুলোর কিছুই না থাকলে বিয়ের কাবিন নামা দিয়ে আবেদন করতে হয়।
মোবাইল নাম্বার পরিবর্তন করবো কি করে?
আইডি কার্ডের মোবাইল নাম্বার পরিবর্তন করার জন্য NID Website এ রেজিস্ট্রেশন করার সময় ফোন নাম্বার ভেরিফিকেশন করতে OTP পাঠানো হয়। সে ধাপে মোবাইল পরিবর্তন করুন বাটনে চেপে আপনার নতুন মোবাইল নাম্বার দিলেই মোবাইল পরিবর্তন হওয়র যাবে।
স্মার্ট কার্ড সংশোধন ফি কত?
জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন করতে সর্বনিন্ম ২৩০টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৩৪৫টাকা ফি প্রদান করতে হয়। আবেদনের ক্যাটাগরি ও ধরনের উপর সংশোধন ফি নির্ভর করে।
আইডি কার্ডের বয়স বাড়াবেন কি করে?
নিজের মন মতো ভোটার আইডি কার্ডের বয়স বাড়ানো বা কমানো যায় না। বয়স পরিবর্তনের স্বপক্ষে প্রমাণ থাকলেই কেবল জন্মতারিখ পরিবর্তন করা যায়।
স্মার্ট কার্ড কিভাবে সংশোধন করা যায়?
স্মার্ট কার্ড সংশোধন করার জন্য প্রথমে services.nidw.gov.bd ওয়েবসাইটে আপনার স্মার্ট কার্ড নম্বর ও জন্ম তারিখ দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করুন। ফেইস ভেরিফিকেশন করে লগইন করুন। এবার প্রোফাইল অপশনে যান এবং এডিট লিংকে ক্লিক করে তথ্য সংশোধন করুন। সংশোধন ফি পরিশোধ ও প্রয়োজনীয় প্রমাণপত্র আপলোড করে আবেদন জমা দিন। আবেদন অনুমোদন হলে তথ্য সংশোধন হবে।
কিভাবে এন আইডি কার্ডে রক্তের গ্রুপ যুক্ত/পরিবর্তন করব?
এনআইডি কার্ডে রক্তের গ্রুপ থাকা জরুরি। কোন জরুরি মুহূর্তে আইডি কার্ড দেখেই রক্তের গ্রুপ সম্পর্কে জানতে পারবে। আইডি কার্ডে রক্তের গ্রুপ যুক্ত / পরিবর্তন করতে স্বাস্থ্য ক্লিনিক থেকে Blood group Test Report আবেদনের সাথে জমা দিতে হবে।